Yasmin Sultana

Nandonik Samahar

আমি ইয়াসমিন সুলতানা। আমার উদ্যোগের নাম "নান্দনিক সমাহার "।২০১৯ সাল থেকে কাজ করছি যশোর থেকে যশোরের ঐতিহ্যবাহী সকল ধরনের হাতের কাজের পণ্য নিয়ে। যশোরের ঐতিহ্যবাহী নকশি কাঁথা, হাতের কাজের শাড়ি, থ্রি পিস, কুর্তি, ওয়ালমেট, কুশন কভার, বেবি ড্রেস, বেবি কাঁথা, হাতের কাজের শাল সহ হোমডেকর পণ্য নিয়ে। নান্দনিক সমাহারের যাত্রা শুরু হয়েছিল মাত্র তিন হাজার টাকা নিয়ে। জার্নিটা এত সহজ ছিল না। এল,এল,বি কমপ্লিট করে জর্জ কোর্টে যখন শিক্ষানবিশ আইনজীবী হিসেবে প্র্যাকটিস করছিলাম তখন তৃণমূল পর্যায় সহ সবস্তরের নারীদের একটি অসহায়ত্ব লক্ষ্য করেছিলাম। একটা সময় এসে তাদের চাকরির বয়স থাকত না এবং তখন কি করবে সেটা বুঝতে পারত না ।তখন থেকেই মনে হতো আমাকে এমন কিছু করতে হবে যেখানে আমি একা না অনেককে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করে দিতে পারব। যেহেতু হাতের কাজের পণ্যকে ভালোবাসি এবং যশোরে থাকি তাই এই যশোরের ঐতিহ্যবাহী হাতের কাজের পণ্য নিয়ে নিজের উদ্যোগ শুরু করি। সে সময় ইন্টারনেট তেমন ব্যবহার করতাম না কিন্তু উদ্যোগের জন্য প্রথম অনলাইন পেজ খুলি পরবর্তীতে নিজে সার্চ দিয়ে নারীদের জন্য প্ল্যাটফর্ম খুঁজতে থাকি উই এর সন্ধান পাই। উই তে জয়েন হয়েই মাস্টার ক্লাস নামে একটি ট্রেনিং দেখতে পাই এবং কিছু জেনে না বুঝেই এই ট্রেনিংয়ে অংশগ্রহণ করতে থাকি। ধীরে ধীরে ব্যবসা সম্পর্কে এই ট্রেনিংয়ের মাধ্যমে অনেক কিছু জানতে এবং শিখতে পারি। ২০২১ সালে যশোর জেলার প্রথম জেলা প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্বপ্রাপ্ত হই এবং দীর্ঘ তিন বছর সে দায়িত্ব নিষ্ঠার সাথে পালন করি। ২০২৩ সালে সরকার থেকে যশোর জেলার শ্রেষ্ঠ জয়ীতা হিসেবে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী নারী হিসেবে সম্মাননা পাই। এছাড়াও তৃণমূল পর্যায়ে থেকে শুরু করে সব স্তরের নারীদের "নান্দনিক সমাহার "প্রতিষ্ঠান থেকে ট্রেনিং দিচ্ছি । বর্তমানে আদ-দ্বীন ওয়েলফেয়ার সেন্টারের ফ্যাশন ডিজাইন এবং ড্রেস মেকিং এর ট্রেইনার হিসেবে নিযুক্ত আছি। এছাড়াও গ্রাফিক্স ডিজাইন এর কোর্স কমপ্লিট করে ফ্রিল্যান্সার হবার জন্য এবং Assessor হিসেবে নিজেকে তৈরি করার পথে চলছি। বর্তমানে নান্দনিক সমাহারের পণ্য বিশেষ করে নকশি কাঁথা ইটালি, স্পেন ,জার্মানি, অস্ট্রেলিয়া ,ইন্ডিয়া ,রাশিয়া সহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে পড়েছে। ৩০০০ টাকার বিজনেস বর্তমানে ১০ লক্ষ টাকা ছাড়িয়ে গিয়েছে আলহামদুলিল্লাহ ।বর্তমানে নান্দনিক সমাহারের সাথে স্থায়ীভাবে কাজ করছে ২০ থেকে ২৫ জন নারী কর্মী এছাড়াও অস্থায়ীভাবে ও আরো বেশ কিছু সংখ্যক নারী কর্মী কাজ করছে। "নান্দনিক সমাহারের "পাশাপাশি "নান্দনিক ভোজ" নামে আরও একটি উদ্যোগ শুরু করেছি ।যেখানে যশোরের ঐতিহ্যবাহী খেজুরের গুড়, কুমড়ো বড়ি সহ সকল ধরনের হোমমেড খাবার, আচার ,ফ্রোজেন ফুড ইত্যাদি পাওয়া যাচ্ছে ।আলহামদুলিল্লাহ সফলতার সাথে নান্দনিক ভোজ ও নান্দনিক সমাহার এর মতো আপনাদের দোয়াতে একটু একটু করে এগিয়ে যাচ্ছে।